বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণের মত কার্যকর পদ্ধতির ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ । দারিদ্র্যতা বৈশ্বিক এবং বোধকরি সবচেয়ে বড় চ্যালেন্জ। শত শত বছর ধরে দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ রাষ্ট্রনায়ক ও অর্থনীতিবিদগণ দারিদ্র্যতা দূরীকরণে বিভিন্ন মডেল বা কৌশল নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু কোনটিই বাংলাদেশ উদ্ভাবিত ক্ষুদ্র ঋণের মতো কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় নি এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহনযোগ্যতা বা স্বীকৃতি অর্জন করতে পারে নি। ২০০৬ সালে ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল জয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণের বিশ্বব্যাপি সর্বজনীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে।
ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম বাংলাদেশের দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী বিশেষত নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এই কর্মসূচির ঋণ প্রবাহ তৃণমূল পর্যায়ে পৌছানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সূচক উত্তরণের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠ ও দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধন করেছে। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম শহরাঞ্চলের বস্তি এলাকা এবং গ্রামাঞ্চলে বিপুল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে, যা দেশের দারিদ্র্য সূচক নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ ও অবকাঠামো গত উন্নয়নের জন্য গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, আত্নকর্মসংস্থানের জন্য গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিশেষত যুব সম্প্রদায়ের জন্য পুঁজি ও বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধি, গ্রামীণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরনে ক্ষুদ্র ঋণ সরাসারি ভুমিকা রাখছে।
গ্রামের একজন মহিলা যে কখনই ব্যাংকের ধারে কাছে যায় নি বা ব্যাংক তাকে কখনই ঋণ দিবে না সেই মহিলা বিনা জামানতে সহজ শর্তে এনজিও – এমএফআই এর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাবসা করছে, হাসঁ মুরগির খামার করছে সেখানে আরও ২/৩ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। এটাই তো এদেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ঋণের বড় সাফল্য।